সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১১

Facebook1

ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকেই আজকাল বেশ চিন্তিত। যেকোনো মুহূর্তে হ্যাকারা ঢুকে পড়তে পারে আপনার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে, নিয়ে নিতে পারে ছবি কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য। তারপর কেবলই হয়রানি। এ রকম আরও কত দুঃশ্চিন্তা!
ফেসবুক ব্যবহারকারীদের এ ধরনের দুঃশ্চিন্তা দূর করতে তথ্যপ্রযুক্তিবিদেরা কাজ করে যাচ্ছেন। ফেসবুকে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাঁচটি কৌশল আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। তো আর দেরি কেন; জেনে নিন নিরাপত্তার সেই কৌশলগুলো।

এক. ব্যক্তিগত গোপন (প্রাইভেসি) সেটিং সম্পর্কে জানা
আপনি দীর্ঘদিন ফেসবুক ব্যবহার করলেও নিজের গোপন সেটিং সম্পর্কে ধারণা না-ও থাকতে পারে। এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কখনো এই অপশনটিতে প্রবেশ করেননি। কিন্তু ফেসবুকে নিজের তথ্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোপন সেটিং সম্পর্কে জানা জরুরি।
এ জন্য প্রথমেই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে হবে। এরপর ওপরে ডান দিকে অ্যাকাউন্ট মেন্যুতে ক্লিক করে প্রাইভেসি সেটিংয়ে আবার ক্লিক করতে হবে। প্রাইভেসি সেটিং পেজটি এলে সেটিং টেবিল থেকে কাস্টমাইজ সেটিংয়ে ক্লিক করতে হবে। এখন নির্ধারণ করুন, বন্ধু, বন্ধুর বন্ধু অথবা সবার সঙ্গে কী কী এবং কোন কোন তথ্য আপনি শেয়ার করতে চান অথবা চান না।
এখানেই শেষ নয়। এরপর ভিউ সেটিংয়ে ক্লিক করুন। এখন দেখতে পাবেন অন্যরা আপনার ফেসবুকের পেজটি কেমন দেখতে পাবেন। এভাবে নিজের কোন ধরনের তথ্য আপনি শেয়ার করতে চান, তা সহজেই নির্ধারণ করতে পারবেন।

দুই. কী তথ্য পোস্ট করছেন, তা ভালোভাবে দেখা
ফেসবুকে আপনি ইচ্ছামতো মনের কথা, কবিতা-গল্প-গানের লাইন, তথ্য পোস্ট করতে পারেন। পোস্টের লেখা দেখতে পাবে আপনার ফেসবুক বন্ধুরা। আপনি হতে পারেন যেকোনো মানুষের বন্ধু। যাঁকে হয়তো কখনো চোখে দেখেননি, এমন মানুষেরও। ডিজিটাল যুগে এ ধরনের অনেক কিছুই সম্ভব। তবে কিছু বিষয় থাকে একান্তই গোপনীয়। তাই আপনি কী তথ্য পোস্ট করছেন, সেটা ভালোভাবে দেখে তারপর পোস্ট করা উচিত। তাই নিজের তথ্যের নিরাপত্তার প্রথম বিষয় হচ্ছে কী তথ্য পোস্ট করছি, সেটা ভালোভাবে ভেবে-চিন্তে পোস্ট করা।

তিন. তৃতীয় পক্ষের অ্যাপলিকেশন নিয়ন্ত্রণে রাখা
বিশ্বব্যাপী ফেসবুকের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট রয়েছে। এসব ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপলিকেশন প্রদানের সুযোগ রয়েছে। এ ধরনের ওয়েবসাইট থেকে অনেক সময় আপনার ফেসবুক পেজে অ্যাপলিকেশন ব্যবহারের অনুরোধ আসে। ফেসবুকের পাশাপাশি অন্য কোনো ওয়েবসাইট থেকে এ ধরনের অনুরোধ এলে ভালোভাবে না জেনে তা গ্রহণ করা ঠিক নয়। ওই অ্যাপলিকেশনের কারণে আপনি যতবার বা যতক্ষণ অনলাইনে থাকেন, তার চেয়েও বেশি সময় দেখাতে পারে। এমনকি আপনার ফেসবুক পেজেও তাঁরা প্রবেশ করতে পারেন।
যদি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপলিকেশন ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনার ফেসবুক প্রাইভেসি সেটিংয়ের এডিট সেটিংয়ে ক্লিক করুন। এরপর কোন কোন অ্যাপলিকেশন ও ওয়েবসাইটকে আপনি গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ধারণ করুন। এর ফলে ওই সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলোই আপনার পেজে দেখা যাবে।

চার. নিয়মিত তথ্য কাটছাঁট করা
অনেকেই আপনাকে বন্ধু হওয়ার অনুরোধ পাঠাতে পারে। আপনি সেগুলো গ্রহণও করতে পারেন। কিন্তু যদি কেউ আপনাকে বিভিন্নভাবে বার্তা বা তথ্য দিয়ে বিরক্ত করতে থাকে কিংবা অপ্রয়োজনীয় তথ্য পাঠাতে থাকে; তখন ওই বন্ধুকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়াই ভালো। তা ছাড়া মাঝেমধ্যে বন্ধুদের তালিকা হালনাগাদ করাও ভালো। এভাবে কাউকে বাদ দিলে এ জন্য ফেসবুক থেকে কোনো ধরনের বার্তা বা সতর্কতা আপনাকে পাঠাবে না। তা ছাড়া অপ্রয়োজনীয় নিজের অনেক তথ্যও বাদ দেওয়া বা মুছে ফেলা যেতে পারে। মোট কথা নিয়মিত নিজের পেজের তথ্য কাটছাঁট করা ভালো। নিজের বার্তা, বন্ধুর অনুরোধসহ অন্যান্য তথ্য নিয়মিত কাটছাঁট করলে তথ্যের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছেই থাকে।

পাঁচ. অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করে
ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলার পর কোনো কারণে যদি আর ব্যবহারের ইচ্ছা না থাকে, তবে অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করাই ভালো। তাহলে নিজের তথ্য হারানো বা অন্যের কাছে পৌঁছানোর আর কোনো আশঙ্কা থাকবে না।
অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করতে অ্যাকাউন্ট সেটিংয়ে গিয়ে একেবারে নিচের দিকে ‘ডিঅ্যাকটিভেট’ লিংকটি পাওয়া যাবে। এটিতে ক্লিক করলে আপনার অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। তবে অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হওয়া মানেই আপনার অ্যাকাউন্ট একেবারে হারিয়ে যাওয়া (ডিলিট) নয়। আপনি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট একেবারে মুছে ফেলতে চাইলে তাও করতে পারবেন। স্থায়ীভাবে অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলতে অ্যাকাউন্টের মধ্যে হেল্প সেন্টারে ক্লিক করতে হবে। এরপর পারমানেন্টলি ডিলিট অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে। এ ছাড়া http://on.fb.me/3qsIFP এই লিংকের মাধ্যমেও সরাসরি মুছে ফেলা অপশনে যাওয়া যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন